বিদ্যুৎ চমকালে করনীয়
বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় না জানার কারণে অনেকের মৃত্যু ঘটে। বিশেষ করে যারা গ্রামে বসবাস করে সাধারণত তারা বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় সম্পর্কে তেমন কোনো ধারনা রাখে না। আপনাদের সুবিধার্থে আজকের এই আর্টিকেলে বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব।
আপনি যদি বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ বিদ্যুৎ চমকালে করনীয়
- বিদ্যুৎ চমকানোর কারণ
- বিদ্যুৎ চমকালে করনীয়
- বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায়
- বিদ্যুৎ চমকানোর সময় কি করা উচিত নয়
- শেষ কথা
বিদ্যুৎ চমকানোর কারণ
বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় সম্পর্কে জানার আগে আমাদেরকে অবশ্যই বিদ্যুৎ চমকানোর কারণ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। আকাশে যখন প্রচুর পরিমাণে মেঘ থাকে সাধারণত তখন বিদ্যুৎ চমকায় এবং অনেক শব্দ শোনা যায় কিন্তু এর আসল কারণ কি সাধারণত আমরা অনেকেই জানিনা। তাই চলুন আগে বিদ্যুৎ চমকানোর কারণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ বাড়িতে বসে ২০ উপায়ে ইনকাম - বাড়িতে বসে হাতের কাজ করে আয়
মেঘের কারণে আকাশে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় এবং আমরা বাসা বাড়িতে যে বিভিন্ন ধরনের বিদ্যুৎ ব্যবহার করি সাধারণত এগুলো একই। আকাশে যখন মেঘ থাকে সাধারণত যখন জলীয় বাষ্প এত বেশি ঠান্ডা হয়ে যায় যে সেগুলো বরফে আকার ধারণ করে। আর বরফের আকার ধারণ করতে বেশি সময় লাগে না। আর বরফের বরফে পারস্পরিক সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।
সাধারণত এই সংঘর্ষ হওয়ার ফলে ইলেকট্রিক চার্জ উৎপন্ন হয়। আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি যে মেঘের উপরের দিকে থাকে পজিটিভ চার্জ এবং নিচের দিকে থাকেন নেগেটিভ চার্জ। যেহেতু বিপরীত ধর্মী চার্জ পরস্পরকে আকর্ষণ করে তাই পজেটিভ চার্জ ও নেগেটিভ চার্জ পরস্পরের সংস্পর্শে আসলেই এদের মধ্যে বিভব পার্থক্য এত বেশি বেড়ে যায় যে উপর থেকে নিচের দিকে চার্জ নির্গত হয়। যার কারণে বিদ্যুৎ মাটির দিকে নেমে আসে।
বিদ্যুৎ চমকালে করনীয়
সাধারণত বৈশাখ মাসের দিকে বেশি বিদ্যুৎ চমকানোর বিষয়গুলো লক্ষ্য করা যায়। যদি বিদ্যুৎ চমকাই তাহলে আমাদের বেশ কিছু করণীয় আছে। বিশেষ করে যারা গ্রামে বাস করে সাধারণত তাদের বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত থাকা উচিত। কারণ প্রতিবছর এই বিদ্যুৎ চমকানোর কারণেই বজ্রপাত হয় অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। তাহলে চলুন বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১। যখন মেঘ ডাকা শুরু করবে তখন আমাদেরকে বাইরে অবস্থান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সাধারণত এরকম অবস্থা এক ঘন্টার মত স্থায়ী থাকে। সাধারণত এই সময়টুকু আপনাকে ঘরে থাকার চেষ্টা করতে হবে। যদি বাইরে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই নিরাপদ জায়গায় নিতে হবে।
২। আপনি যখন ভবন তৈরি করবেন সাধারণত তখন আপনাকে বজ্রপাত নিরোধোক ব্যবস্থা রাখতে হবে। সাধারণত এরকম ব্যবস্থা যদি না থাকে তাহলে অনেক সময় বজ্রপাত আপনার বাড়িতে এসে আঘাত হানতে পারে যার ফলে আপনার এবং আপনার বাড়ির ক্ষতি হতে পারে।
৩। আপনি যদি কখনো গভীর আকৃতির মেঘ দেখতে পান তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে যে বজ্রপাত হতে চলেছে। এক্ষেত্রে যদি আপনার বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই রাবারের জুতা পরে বাইরে যেতে হবে।
৪। যদি আপনার অনেক প্রয়োজনে মাঠে অবস্থান করতে হয় তাহলে আপনাকে পায়ের আঙ্গুলের অপব্যবহার করে দাঁড়াতে হবে। এরপরে যখন বিদ্যুৎ চমকাবে সাধারণত তখন আপনাকে কানে আঙ্গুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসতে হবে।
৫। বজ্রপাতের সময় আমাদের অবশ্যই সকল ধরনের ইলেকট্রনিক্স গুলোকে বন্ধ করে দিতে হবে এগুলোর মধ্যে টিভি, ল্যাপটপ, মোবাইল, ফ্রিজ, এসি সহ আরো অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস গুলো। কারণ অনেক সময় বজ্রপাতের কারণে এগুলোর উপর প্রভাব পড়তে পারে।
বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায়
আমরা ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় সম্পর্কে জেনেছি। বিশেষ করে বৈশাখ মাসে আমরা শুনতে পাই যে বিদ্যুৎ চমকানোর কারণে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। সাধারণত বিদ্যুৎ চমকানোর কারণে বজ্রপাত হয়। এখন আমরা বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব।
আরো পড়ুনঃ কয়েকটি সেরা উপায়ে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করুন
১। যখন আকাশে অনেক মেঘ ডাকবে তখন আপনাকে ভেবে নিতে হবে যে এখন বজ্রপাত হবে সাধারণত এই সময় যদি আপনি মাঠে থাকেন অথবা খোলা জায়গায় থাকেন তাহলে দ্রুত এই অবস্থান ত্যাগ করুন।
২। এই সময় যত দ্রুত সম্ভব আপনাকে দালান অথবা ছাউনির নিচে আচরণ নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে টিনের চালাগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
৩। বজ্রপাতের সময় উঁচু গাছপালা যেকোনো ধরনের বৈদ্যুতিক খুঁটি যেকোনো ধরনের তার বা ধাতব খুঁটি অথবা মোবাইলের টাওয়ার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
৪। যদি বজ্রপাত হয় এবং এ সময় আপনি গাড়ির ভেতরে অবস্থান করেন তাহলে গাড়ির ধাতব বংশের সঙ্গে শরীরের সংযোগ ঘড়ানো থেকে বিরত রাখতে হবে। সম্ভব হলে গাড়িসহ নিজেকে একটি নিরাপদ জায়গায় অবস্থান করাতে হবে।
৫। যদি আকাশে কালো মেঘ দেখাতেই তাহলে আপনি যদি নদী অথবা পুকুরের মধ্যে থাকেন তাহলে সেখান থেকে তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসুন।
৬। যখন বজ্রপাত হবে সাধারণত তখন আমাদেরকে ধাতবাতোযুক্ত ছাতা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যদি অনেক প্রয়োজন হয় তাহলে প্লাস্টিক অথবা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করতে হবে।
৭। যখন বজ্রপাত হবে অথবা অনেক জোরে ঝড় হবে তখন বাড়ির যে কোন ধাতব কল সিড়ির ধাতব রেলিং অথবা পাইপ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বিদ্যুৎ চমকানোর সময় কি করা উচিত নয়
আমরা ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ চমকালে করনীয় সম্পর্কে জেনেছি কিন্তু বিদ্যুৎ চমকালে বেশ কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে। সাধারণত এই ভুলগুলো আমরা সকলেই করে থাকি তাই অবশ্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে বিদ্যুৎ চমকানোর সময় কি করা উচিত নয় তা জেনে নিতে হবে।
১। যখন বিদ্যুৎ চমকা হবে তখন আপনাকে অবশ্যই বাইরে থাকা যাবে না। যদি আপনি কোন কারনে বাইরে থাকেন তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাসায় চলে আসুন অথবা নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় গ্রহণ করুন।
২। আমরা অনেকেই বিদ্যুৎ চমকানোর সময় ঘরের জানালা দিয়ে দেখতে যাই কিন্তু এই কাজটি করা থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে। বিদ্যুৎ চমকানোর সময় কখনো জানালা দিয়ে মুখ বের করা যাবে না।
৩। যখন অনেক জোরে বিদ্যুৎ চমকাবে সাধারণত তখন আমাদেরকে সকল ধরনের বৈদ্যুতিক সংযোগগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে এবং যেকোনো ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪। বজ্রপাতের সময় আমাদেরকে গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে এবং নিরাপদ জায়গায় নিতে হবে। যখন বৃষ্টি হবে এবং বিদ্যুৎ চমকা হবে তখন জমে থাকা পানির উপর দিয়ে হাঁটা যাবে না।
বিদ্যুৎ চমকালে করনীয়ঃ শেষ কথা
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে বিদ্যুৎ চমকানোর কারণ, বিদ্যুৎ চমকালে করনীয়, বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায়, বিদ্যুৎ চমকানোর সময় কি করা উচিত নয়? সাধারণত এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদেরকে বিস্তারিত জেনে রাখতে হবে। সাধারণত এই সময় আমরা অনেক বেশি সাহস দেখায় এবং বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকি তাই আমাদের বেশি ক্ষতি হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন ৫০০ টাকা ইনকাম করার ১৯ টি উপায়
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ২৫৪২৭
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url