নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ সম্পর্কে জানতে চান। নীলফামারী জেলার অপরূপ সৌন্দর্যের নীলাভূমি দেখে মুগ্ধ হয় না এমন কোন মানুষ নেই তাই নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ সম্বন্ধে জানার আগ্রহ তো সকলের মধ্যে আসে। তাই আজ বিস্তারিত আলোচনা করব নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ সম্বন্ধে।
আপনারা যদি নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য পেতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র: নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
ভূমিকা
নীলফামারী শহরের সৌন্দর্য দেখে সে শহর সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করার আগ্রহ অনেকের মধ্যেই রয়েছে। নীলফামারী জেলার বিখ্যাত খাবার থেকে শুরু করে নীলফামারী জেলা সম্পর্কে তথ্য ও বিভিন্ন নিদর্শনীয় স্থানগুলি সম্পর্কে আগ্রহের শেষ নেই দর্শনার্থীদের। শুধু তাই নয় নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ সম্বন্ধেও আমাদের জানার অনেক আগ্রহ।
তাই এই সম্বন্ধে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুগল সাইট থেকে অনুসন্ধান করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে অনুসন্ধান করি যেমন সেই স্থানগুলো কেন প্রসিদ্ধ সেই স্থানগুলো কে প্রতিষ্ঠা করেছেন সেই স্থানগুলো প্রতিষ্ঠা হওয়ার পেছনের কাহিনী এই সমস্ত কিছু জানার আগ্রহের শেষ নেই আমাদের।
এছাড়াও নীলফামারীর বিভিন্ন রাজা ও জমিদারদের জমিদারীত্ব ও কাহিনী নিয়ে বিশ্বের সকলেরই অনেক কৌতুহল থাকে। কোন রাজা বা জমিদার কোন ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য বিখ্যাত বা তার জমিদারিত্ব জীবন কেমন ছিল তার জীবনের ইতিহাস জানার আগ্রহের কমতি নেই।
নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
নীলফামারী জেলা শুধু তার ঐতিহ্য নিদর্শন, ইতিহাস ও সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত নয় নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের দিক দিয়ে বিবেচনা করলেও নীলফামারী অঞ্চলকে বিখ্যাত বলা যেতে পারে। নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো:
আরো পড়ুন: ২৬ মার্চ এর রচনা ও কবিতা জেনে নিন
- মশিউর রহমান: নীলফামারী জেলার মশিউর রহমান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি যাদু মিয়া নামে সুপরিচিত ছিলেন। মশিউর রহমান ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ৯ জুলাই তৎকালীন রংপুর জেলার ডিমলা উপজেলার খগাখুড়ি বাড়ি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আর মৃত্যুবরণ করেন মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ১৯৭৯ সালের ১২ই মার্চ এক দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ হয়ে।
তিনি গুরুতর রূপে আহত হন এবং বেশ কয়েক দিন অজ্ঞান অবস্থায় ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ১২ই মার্চ মারা যায়। তার পিতার নাম ছিল ওসমান এবং মাতার নাম ছিল আলহাজ্ব আবিউন নেছা। মশিউর রহমান জিয়াউর রহমানের সরকারের সময় প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী হিসেবে ছিলেন।
- জাহানারা ইমাম: জাহানারা ইমাম ছিলেন একজন বাংলাদেশী লেখিকা, কথা সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও একাত্তরের ঘাতক দলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেত্রী। তিনি বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে বড়ঞা থানার অন্তর্ভুক্ত সুন্দরপুর গ্রামের রক্ষণশীল বাঙালি মুসলিম পরিবারে ১৯২৯ সালের ৩ মে জন্মগ্রহণ করেন। আর মৃত্যুবরণ করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিশিগানের ডেট্রয়েট নগরীর সাইনাই হাসপাতালে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯৪ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭:০০ টায় ৬৫ বছর বয়সে। জাহানারা ইমামের পিতা ছিলেন সৈয়দ আব্দুল আলিম যিনি পেশায় একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। এবং তার মাতার নাম ছিল সৈয়দা হামিদা বেগম।
- মহেশ চন্দ্র রায়: মহেশ চন্দ্র রায় বাংলার ঐতিহ্যবাহী সংগীত ভাওয়াইয়া গানের জন্য নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি হিসেবে সুপরিচিত হন। মহেশ চন্দ্র রায় উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী ছিলেন। কানিছাত গারুনু আকাশি আকালী, টুলটুলিরে টুলটুলি দিনাও বেড়াইস চুলখালি, কোঁড়ক কোঁড়ত কড়কা বাজে, তুই যাগে নানী থুইয়া আয় এলায়, দয়াল তুই আরিনে মোর নিদানে, বিয়াও বিয়াও করিস না মন, আবো তুই মরিয়া গেইলে এ নাইওর মোক কায় নিগাইবে, না দেখো তোর টেরিয়া সিতা, ওরে ফাঁক দিওনা প্রাণ বন্ধুয়া মাকলা বাশের বাঁশিতে ইত্যাদি গানগুলো মহেশ চন্দ্র রায়ের বিখ্যাত গান। মহেশ চন্দ্র রায় ১৩২৫ সালের মাঘ মাসের ১৯ তারিখে দলিত শ্রেণীভুক্ত রাজবংশীয় ক্ষত্রিয় বংশের জন্মগ্রহণ করেন। মহেশচন্দ্র রায়ের বাবার নাম ছিলেন বাবুরাম রায় এবং মাতার নাম বিমলা রানী।
- আসাদুজ্জামান নূর: আসাদুজ্জামান নূর হলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ। ১৯৭২ সালে তার অভিনয় জীবন শুরু হয় মঞ্চদল নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সাথে। এই নাট্য দলের ১৫ টি নাটকে তিনি ৬০০ বারের বেশি অভিনয় করেন। সংস্কৃতিতে অবদান রাখার জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ পরিশদ এর সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘদিন যাবৎ। তিনি শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নীলফামারীর ২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
- বেবি নাজনিন: নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বেবি নাজনিন অন্যতম। বেবি নাজনীন বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও রাজনীতিবিদ। ১৯৭৬ সাল থেকে এই পর্যন্ত তিনি অনেক গান গেয়েছেন। বেবি নাজনিন ২০০৩ সালে শ্রেষ্ঠ মহিলা গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। বেবি নাজনীনের অসংখ্য জনপ্রিয় গানগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ঘুম ভাঙ্গাইয়া গেল রে মরার কোকিলে এই গানটি। এছাড়াও আরো জনপ্রিয় গানগুলি হচ্ছে এলোমেলো বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ির আঁচল, লোকে বলে আমার ঘরে নাকি চাঁদ এসেছে, ওই রংধনু থেকে কিছু কিছু রং, কই গেলা নিঠুর বন্ধুরে এই গানগুলো বিশুব্যাপী তুলুম জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
- আরিফ হোসেন মুন: আরিফ হোসেন মুন ১৯৭৩ সালের ৫ই জুন বাংলাদেশের নীলফামারী ডোমার উপজেলায় চিকন মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি তার শৈশব সেখানেই অতিবাহিত করেছেন। আরিফ হোসেন মুনের বাবার নাম ছিল মোঃ আনোয়ার হোসেন। তার বাবা পেশায় একজন স্বনামধন্য আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। এছাড়াও তার বাবা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। আর আরিফ হোসেন চৌধুরী ছিলেন পেশায় একজন ফুটবলার।
নীলফামারী জেলা সম্পর্কে তথ্য
নীলফামারী জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি দেখে নীলফামারী জেলা সম্পর্কে তথ্য অর্জন করতে চাই না এমন মানুষের সংখ্যা অনেক কম। সাধারণত যারা ভ্রমণপ্রেমী যারা বিভিন্ন সৌন্দর্যপূর্ণ জায়গায় ভ্রমণ করতে পছন্দ করে সে ধরনের মানুষ বিভিন্ন জায়গা সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। নীলফামারী জেলা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে চাইলে সর্বপ্রথম জেনে নিন এই জেলার সদর ও রাজধানীর নামও নীলফামারী।
নীলফামারী জেলার উত্তর সীমান্তে ভারতের জলপাইগুড়ি জেলা এবং অন্যদিকে রয়েছে লালমনিরহাট জেলা রংপুর। নীলফামারী মূলত একটি কৃষি প্রধান জেলা। জেলার অন্যতম প্রধান অর্থকারী ফসল ভুট্টা ও মরিচ। নীলফামারী জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলায় তিস্তা নদীর অববাহিকায় প্রচুর ভুট্টা চাষ হয় এবং ডোমার ডিমলায় মরিচের চাষ হয়। নীলফামারী জেলার আয়তন প্রায় ১৮২১ বর্গ কিলোমিটার।
নীলফামারী জেলার বিখ্যাত খাবার
নীলফামারী জেলার বিখ্যাত খাবার বা ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম খাবার হচ্ছে প্যালকা। দেশের উত্তরাঞ্চলের বহু ভাষাভাষী মানুষদের শহর নীলফামারীর সৈয়দপুর। ৪ লাখ জনসংখ্যার অধ্যুষিত এই শহরে বাংলার পাশাপাশি উর্দু ভাষাও চলে। কারণ এই শহরে বাঙ্গালীদের পাশাপাশি বিহারীদের সংখ্যাও রয়েছে অধিক।
সে কারণে এ শহরের খাবার দাবারের রয়েছে আলাদা বৈচিত্র। নীলফামারী জেলার বিখ্যাত খাবারগুলির মধ্যে আরও রয়েছে গরুর চাপ, শিক কাবাব, মোগলাই, বিরিয়ানি, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, পেশোয়ারি পরোটা, রুটি কাবাব, জালি কাবাব, ইত্যাদি খাবারের প্রচলন এ শহরে অনেক বেশি।
শেষ কথা
উপরিউক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ কে এবং তারা কি জন্য বিখ্যাত এ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা। নীলফামারী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ সম্বন্ধে ও নীলফামারী জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্বন্ধে আপনি কতটুকু তথ্য অর্জন করতে পেরেছেন এবং কোন কোন বিষয়গুলি আপনার ভালো লেগেছে তা আপনার বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 26181
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url