ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান - ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান

ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান এর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সৌন্দর্যের অবিরাম ধারা। এই পোস্টে ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান সমূহের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন এক সৌন্দর্যের মহিমা। 
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে, সেই জায়গাগুলোতে আপনি চাইলে ঘুরে আসতে পারেন। কারণ ময়মনসিংহের প্রত্যেকটি জেলাতেই অসংখ্য মনোরম দর্শনীয় স্থান রয়েছে এবং বেশ কয়েকটি উপজাতি গোষ্ঠীরও বসবাস বিদ্যমান যা আপনার মনকে খুব সহজেই প্রাণচঞ্চল করে তুলতে পারে।

পেইজ সূচিপত্র

ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান কোথায়

ময়মনসিংহ জেলার যেই সকল বিখ্যাত স্থান রয়েছে, সেই প্রাকৃতিক শোভা দেখার জন্য অনেকেই ভ্রমণ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন। ময়মনসিংহ জেলার চারিদিকে ছড়িয়ে আছে অনেক প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বিখ্যাত স্থান। ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থানসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

এছাড়াও মুক্তাগাছার রাজবাড়ী, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী, রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি, ময়মনসিংহ টাউন হল, গৌরীপুর রাজবাড়ী, দুর্গাবাড়ী সিলভার প্যালেস, ময়মনসিংহ জাদুঘর, শশী লজ, বিপিন পার্ক এবং আরও অন্যান্য বিখ্যাত কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে।


ময়মনসিংহের বেশিরভাগ অঞ্চল এক সময়ে জমিদারদের দখলে থাকার কারণে বেশ কিছু জমিদার বাড়ির নাম এখানে রয়েছে। ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান গৌরীপুর মহিলা কলেজ ও গৌরীপুর কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত দুইটি দালান অতীতের আলিসান জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত ছিল।

ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান এর জায়গা গুলোকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে বহু দিন পূর্ব থেকেই। খুব সহজেই কেউ চাইলে সেই জায়গা গুলো ঘুরে আসতে পারে। প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস সমৃদ্ধ করে গিয়েছে মুক্তাগাছা রাজবাড়ি যা পূর্বে বিনোদবাড়ি নামে পরিচিত ছিল।

ময়মনসিংহ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ কি কি

ময়মনসিংহ জেলায় বেশ কিছু দর্শনীয় স্থানসমূহ রয়েছে যার মধ্যে হলো মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ি, শশী লজ, সন্তোষপুর রাবার বাগান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়না দ্বীপ, আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি, রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি বিদ্যমান।

পানিহাটা তারানি পাহাড়, রাজার পাহাড়, মধুটিলা ইকোপার্ক, বিরিশিরি, কমলা রানী দীঘি, সোমেশ্বরী নদী ইত্যাদি। ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে কিছু দর্শনীয় জায়গা নিয়ে চলুন বিস্তারিত জেনে আসি।

১। শশী লজঃ
শশী লজ দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম। এই শহরের সবচাইতে সেরা বাড়ি এর মধ্যে শশী লজ ছিল অন্যতম। যখন জমিদারী বিলুপ্ত হয়ে যায়, তখন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে যুগ যুগ ধরে এই শশী লজ দাঁড়িয়ে আছে। এটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

২। সন্তোষপুর রাবার বাগানঃ 
ময়মনসিংহে সবচাইতে দৃষ্টিনন্দন ভাবে সাজানো এই রাবার বাগান সকলের মন কাড়ে। ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের সন্তোষপুরে রাবার বাগান অবস্থিত। বিভিন্ন রঙের ফুল এখানে ফুটে। যা শক্ত পাতার আবরণে আবৃত থাকে।

দেশি বিদেশি বিভিন্ন জাতের বৃক্ষ এখানে রয়েছে। এই রাবার বাগান বেশ ভালো লাগার মত একটি জায়গা। সন্তোষপুর রাবার বাগানে প্রচুর পরিমাণে বানর রয়েছে, যা দেখে অনেকেই খুব আনন্দ পেয়ে থাকে। বানরগুলো আপনার কোলেও উঠতে পারে।

এইরকম হলে আপনি বানরকে কিছু খাবার দিতে পারেন। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের আগে ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে আপনি এই সন্তোষপুর রাবার বাগান যেতে পারবেন।

৩। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ঃ 
ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান এর মধ্যে দেশের সবচাইতে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। কৃষি বিজ্ঞানের সকল শাখা ব্যবস্থার নিশ্চয়তার জন্য এটি কৃষিবিদ, প্রাণিবিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। 

ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান ভেটেরিনারি এবং কৃষি অনুষদ থেকে এই শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ময়মনসিংহ শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দক্ষিণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর পশ্চিম প্রান্তে এই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।

৪। ময়না দ্বীপঃ 
আপনি যদি ময়না দ্বীপ যেতে খুবই আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে ময়মনসিংহ শহরের অতি নিকটেই জিরো পয়েন্টে যেতে হবে।বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ মোড়ের দক্ষিণে গৌরীপুরের ভাংনামারী ইউনিয়ন বাজারের কাছাকাছি ব্রহ্মপুত্রের বেশ কিছু দূরে যেতে হবে।

সেখানে ময়নার চর নামে একটি দ্বীপ রয়েছে। এখানে গাছ গাছালীতে ঘেরা উঁচু টিলা ও জঙ্গলের মত জায়গা রয়েছে যা ময়না দ্বীপ নামে পরিচিত। দ্বীপটি খুবই নির্জন জায়গা। এখানে লোকজনের তেমন কোন চলাচল নেই।

এই ময়না দ্বীপে কোন ধরনের বাড়িঘর নেই এবং থাকার ব্যবস্থা নেই। তাই যদি আপনি দেশের যেকোন স্থান থেকে এই ময়না দ্বীপে বেড়াতে যান তাহলে ময়মনসিংহ শহরের আবাসিক হোটেলে থাকতে পারেন।

৫। মুক্তাগাছার জমিদার বাড়িঃ 
জমিদার বাড়িগুলোর মধ্যে মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ি খুবই প্রাচীন একটি দর্শনীয় স্থান। এখানে বিশেষ করে ময়মনসিংহ থেকে প্রায় ষোল কিলোমিটার দূরে এই মুক্তাগাছা অবস্থিত। শ্রীকৃষ্ণ আচার্য জমিদারীর শুরুর পূর্বে এটি বিনোদবাড়ি নামে পরিচিত ছিল।

জমিদার বাড়ির প্রবেশপথে একটি সিংহ দরজার রয়েছে। যার ভিতরে জমিদারের মায়ের ঘর, মন্দির দরবার হল, কাচারি ঘর, অতিথি ঘর, সিন্দুকঘর সহ অন্যান্য আরও অনেক ধরনের ভবন রয়েছে। রাজবাড়ীতে একটি দুর্লভ লাইব্রেরী ছিল, যা মাঝে মাঝে হুমকির সম্মুখীন এর মধ্যে পড়ে যায়।

এই জমিদার বাড়িতে যাওয়ার জন্য আপনাকে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যেতে হবে। সেখান থেকে মুক্তাগাছা যেয়ে জমিদার বাড়ি পৌঁছাতে হবে। মুক্তাগাছা যাওয়ার পর যেই সকল আবাসিক হোটেল রয়েছে, সেখানে আপনি থাকতে পারবেন।

৬। রামগোপালপুর জমিদার বাড়িঃ 
রামগোপালপুর জমিদার বাড়ির ইতিহাস সম্পর্কে সঠিক কোন ধারণা না থাকায় বেশ কয়েকজন বিখ্যাত জমিদারের নাম এখানে উল্লেখ রয়েছে। যার মধ্যে কাশি কিশোর রায় চৌধুরী এই জমিদার বংশের একজন ব্যক্তি ছিলেন। জমিদারী আমলে এখানে সৌন্দর্য অনেক মনোরঞ্জন ছিল।

এই বাড়িতে বসবাসের জন্য চিড়িয়াখানা, মন্দির, বাগানবাড়ি, ভবন এবং বাঁধানো পুকুরঘাট সহ ভেতর বাড়িতে আরও অনেক প্রবেশদ্বার ছিল। মন্দিরে এখনো মাঝে মাঝে পূজার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।

৭। রাজার পাহাড়ঃ 
ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান দর্শনীয় এর মধ্যে রাজার পাহাড় খুবই অন্যতম। এর কাছে রয়েছে বিডিআর ক্যাম্প, ওয়ার্ল্ড ভিশন, কারিতাস, রাবার বাগান এবং বিট অফিস বিদ্যমান। এই রাজার পাহাড়ের উপর থেকে দূরের ভারতের সৌন্দর্য অনেক ভালোভাবে উপভোগ করা যায়।

এখানে বিনোদন স্পট হিসেবেও অনেক অঞ্চলের মানুষ এসে থাকে। এছাড়াও এখানে বাবেলা কালচার একাডেমি জাদুকর, লাইব্রেরী, গির্জা ও মন্দিরসহ অসংখ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিভিন্ন নিদর্শন পাওয়া যায়।

৮। বিরিশিরিঃ 
ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান গুলোর মধ্যে বিরিশিরি একটি। বিরিশিরিতে চিনা মাটির পাহাড়, নীল জলের হৃদ এবং দূরের গাঢ় পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখা যায়। বিরিশিরির বিজয়পুরে আকর্ষণীয় চিনা মাটির পাহাড় ও নীল পানির হৃদ রয়েছে।

ঢাকা থেকে সবার প্রথমে আপনাকে দুর্গাপুর যেতে হবে। সেখান থেকে সুখনগরী থেকে নৌকায় করে একটা ছোট নদী অতিক্রম করে বিরিশিরি যেতে পারবেন।

৯। কমলা রানী দীঘিঃ 
ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে কমলা রানীর দীঘি খুবই প্রাচীন একটি জায়গা। লোকের মুখে শোনা যায় দুর্গাপুরের রানী কমলা শুকনো দীঘির মাঝখানে পূজা দেওয়ার সময় বজ্রপাতের কারণে দীঘির তলার মাটি ফেটে পানি ভরে গিয়েছিল।

এখানেই রানীর সমাধি করা হয়েছিল। তবে যুগের পরিবর্তনে কালক্রমে কমলা রানীর দীঘি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুরের রাজা জানকী নাথ বিয়ে করেছিলেন কমলা দেবীকে। প্রজাদের পানির অভাব মিটানোর জন্য কমলা রানী এই বিশাল দীঘি খনন করেছিলেন।

১০। আঠারবাড়ী জমিদার বাড়িঃ 
আঠারো বাড়ী জমিদার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একটি সমৃদ্ধ জায়গা। এখানে দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল জমিদার বাড়ি রয়েছে। যা খুবই চমৎকার কারুকার্য মন্ডিত। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ আঠারবাড়ী রেলস্টেশন এর কাছাকাছি থেকে আপনি আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন।

১১। সোমেশ্বরী নদীঃ 
পাহাড়ের গা ঘেঁষে বয়ে চলেছে সোমেশ্বরী নদী। এখানে হাঁটু পানি বা এর চেয়ে বেশি পানি দেখা যায়। নৌকা দিয়ে মাঝিরা এখানে ঘুরে বেড়ায় এবং মাঝে মাঝে কেউ মাছ শিকার করে।

পাহাড়ের ঢাল বেয়ে ঝর্ণার পানি এসে পড়ে। এই ঝর্ণার পানি অতি স্বচ্ছ ও ঠান্ডা হয়, যা স্থানীয়রা ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ করতে এই নদীকে ব্যবহার করা হয়।

একদিনে ময়মনসিংহ জেলার ভ্রমণ গাইড কেমন

একদিনে ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান এর সকল ধরনের পর্যটন জায়গা গুলো ঘুরে দেখার জন্য সেই জায়গা গুলো প্রথমে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে। যার মধ্যে বোটানিক্যাল গার্ডেন, ময়মনসিংহ টাউন হল, দুর্গাবাড়ী, কুমির খামার, গারো পাহাড়, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী, ময়মনসিংহ জাদুঘর ইত্যাদি।

এছাড়াও সিলভার প্যালেস, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা, মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি, আলেকজান্ডার ক্যাসেল, শশী লজ, গৌরীপুর রাজবাড়ি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তবে একদিনে ময়মনসিংহ জেলার সাতটি জায়গা আপনি ঘুরে দেখতে পারবেন।

ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান শহরের সবচেয়ে প্রাণকেন্দ্র শশী লজ লাল ইটের তৈরি। রাজবাড়ীর প্রবেশ দ্বারে সাদা মার্বেল দিয়ে নির্মিত একটি মর্মর প্রতিমূর্তি রয়েছে। এছাড়াও এখানে মূল ভবনের পেছনে রয়েছে স্বচ্ছ সাদা একটি দ্বিতল ভবন। যার নাম হচ্ছে জলঘর। রাজবাড়ীর অন্দরমহলে একটি জাদুকর রয়েছে।

যা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এখানে রাজার ব্যবহৃত বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য জিনিস এবং আসবাবপত্র সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। শশী লজ থেকে বের হলে আলেকজান্ডার ক্যাসেল নামে এই ভবনটি আপনি দেখতে পাবেন। যেখানে একটি প্রাসাদ নির্মিত হয়েছে।


অনেক বেশি লোহা এর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে যার কারণে এটিকে লোহা কুঠির নামেও বলা হয়। আলেকজান্ডার ক্যাসেল থেকে আপনি যদি কিছুটা দূরে যেতে পারেন। সেখানে ব্রহ্মপুত্র নদীর কাছাকাছি জয়নুল আবেদীন পার্ক দেখতে পাবেন। এটি ময়মনসিংহ শহরের অন্যতম বিনোদনের একটি জায়গা।

পার্কের অন্য প্রান্তে রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা। যেখানে শিল্পীর আঁকা বিখ্যাত বিভিন্ন ছবি রয়েছে। ময়মনসিংহ শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। যেখানে আপনি পুরো ক্যাম্পাসটি ঘুরে না দেখতে পারলেও অল্প সময়ের মধ্যে কিছু জায়গা দেখতে পারবেন।

মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি দর্শনার্থীদের কাছে বেশ পরিচিত হওয়ায় এটি সবাইকে মুগ্ধ করে। জমিদার বাড়ির সামনেই রয়েছে গোপাল পালের মণ্ডার দোকান। ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান যেখানে মুক্তাগাছার মন্ডা পাওয়া যায়। ময়মনসিংহ অঞ্চলের সবচাইতে বিখ্যাত মিষ্টান্ন এখানে পাওয়া যায়।

মুক্তাগাছার মতো বিখ্যাত স্থান ঘুরতে যেয়ে, আপনি আরও কিছু দর্শনার্থীদের জায়গা দেখে আসতে পারেন। খুবই কাছাকাছি হওয়ার কারণে একই দিনে দর্শনার্থীদের অনেকগুলো জায়গা ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে।

ময়মনসিংহের পর্যটন স্থানে কিভাবে যাবেন

ময়মনসিংহের পর্যটন স্থানগুলোতে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে। আপনি ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলোতে সকালে গিয়ে রাতেও চলে আসতে পারবেন। তবে ময়মনসিংহের পর্যটন স্থানে যাওয়ার বর্ণনা নিম্নরূপ -

১। আপনি যদি ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ি যেতে চান, তাহলে আপনাকে ঢাকা থেকে সবার প্রথমে ময়মনসিংহ যেতে হবে।

ময়মনসিংহ যাওয়ার পর সেখান থেকে মুক্তাগাছার দূরত্ব প্রায় সতেরো কিলোমিটার। মুক্তাগাছা নামার পর সেখানে বাজারের ভিতর দিয়ে একটু অগ্রসর হলেই মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি দেখতে পাবেন।
 
২। শশী লজ যেতে হলে আপনাকে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ প্রথমে যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে আপনি মাসাকান্দা বাস স্ট্যান্ড গিয়ে পৌঁছাবেন। সেই মাসাকান্দা বাস স্ট্যান্ড থেকে আপনি শশী লজ ঘুরে আসতে পারবেন।

৩। সন্তোষপুর রাবার বাগান যাওয়ার জন্য আপনাকে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের আগে ফুলবাড়িয়া বাস স্ট্যান্ড যেতে হবে। তারপর ফুলবাড়িয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি আপনি সন্তোষপুর রাবার বাগান চলে যাবেন।

ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান সন্তোষপুর রাবার বাগান যাওয়ার জন্য আপনি বাইক ব্যবহার করতে পারবেন। তাহলে সকালে যেয়ে ঘুরে রাতে চলে আসতে পারবেন।

৪। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার জন্য আপনি ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যাবেন। ময়মনসিংহ শহরের ব্রীজের যেই মোড় রয়েছে, সেখান থেকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আপনি খুব সহজেই যেতে পারবেন।

৫। আপনি যদি ঢাকা থেকে ময়না দ্বীপে যেতে চান, তাহলে সবার প্রথমে ময়মনসিংহ যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যাবেন। এর অনেকটা কাছাকাছিই ময়না দ্বীপে রয়েছে।

আপনি চারিদিকে তাকালেই দেখতে পাবেন গাছ গাছালি ঘেরা উঁচু টিলা ও জঙ্গলের মত দেখা যাচ্ছে। এটি একটি ময়না দ্বীপ যেখানে আপনি চার পাঁচ মিনিট হেঁটেই যেতে পারবেন।

৬। ময়মনসিংহের আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি যাওয়ার জন্য আপনাকে আঠারবাড়ী রেলস্টেশনে পৌঁছতে হবে। আঠারবাড়ী রেলস্টেশনে যাওয়ার পর আপনি সেখান থেকে আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন।

৭। আপনি যদি রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি যেতে চান, তাহলে আপনাকে ময়মনসিংহ পৌঁছাতে হবে। সেখান থেকে কিশোরগঞ্জ এর রোড দিয়ে রামগোপালপুর বাজারে যেতে হবে। রামগোপালপুর বাজার থেকে আপনি রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন।

৮। যদি আপনি পানিহাটা তারানি পাহাড় যেতে চান, তাহলে আপনাকে ঢাকা থেকে শেরপুরের নকলাতে যেতে হবে। সেখান থেকে আপনি নালিতা বাড়ি হয়ে পানিহাটা তারানি পাহাড় যেতে পারবেন।

ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান নালিতা বাড়ি যাওয়ার পর আপনি সেখানে অনেক আবাসিক হোটেল দেখতে পাবেন। আপনি চাইলে সেখানে থাকতেও পারবেন।

৯। নালিতা বাড়ির কাছাকাছি সীমান্তবর্তী এলাকায় মধুটিলা ইকোপার্ক অবস্থান করছে। আপনি যদি মধুটিলা ইকোপার্কে যেতে চান, তাহলে আপনাকে প্রথমে শেরপুরে যেতে হবে। সেখানে কাছাকাছি যাওয়ার পর আপনি মধুটিলা ইকোপার্ক দেখতে পাবেন।

এখানে থাকার জন্য আপনি গেস্ট হাউজ পাবেন। মাঝারি মানের বেশ কিছু হোটেলও দেখতে পাবেন যেখানে আপনি চাইলে থাকতে পারবেন। ঢাকা থেকে যদি আপনি সকালে রওয়ানা করেন, তাহলে সারাদিন ঘুরে আপনি রাতে ফিরেও আসতে পারবেন।

ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান

ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান এর মধ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, সন্তোষপুর রাবার বাগান, অর্কিড বাগান, তেপান্তর পিকনিক স্পট ভালুকা, কুমির প্রজনন কেন্দ্র ভালুকা, আব্দুল জব্বার জাদুঘর গফরগাঁও, নজরুল স্মৃতি কেন্দ্র, গারো পাহাড়।

সিলভার ক্যাসেল, ময়নার দ্বীপ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আলেকজান্ডার ক্যাসেল, শশী লজ, মুক্তাগাছা রাজবাড়ি, রামগোপালপুর জমিদারবাড়ি, কমলা রানীর দীঘি, সোমেশ্বরী নদী, মধুটিলা ইকোপার্ক, রাজার পাহাড়, আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি এবং আরও অনেক গুলো ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান রয়েছে।


ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থানগুলো দর্শকদের মনে খুব জায়গা করে নিয়েছে। বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান গুলো দেখার জন্য হাজারো লোক ভিড় করে থাকে। বিশেষ করে যদি আপনি ময়না দ্বীপে যেয়ে ঘুরে আসেন, তাহলে আপনি দেখতে পাবেন সেই জায়গাটি একেবারেই নির্জন একটি স্থান। 

কোন লোকজনের চলাচল নেই বললেই চলে। যদি কয়েকজন মিলে যেতে পারেন, তাহলে গাছগাছালি ঘেরা উঁচু টিলা ও জঙ্গলের মত সুন্দর একটি সুনিবিড় স্থান থেকে ঘুরে আসতে পারবেন। এর পাশাপাশি একই সাথে অন্যান্য যেই সকল বিখ্যাত স্থান রয়েছে, সেইগুলোতেও যেতে পারেন।

ময়মনসিংহ জেলার পর্যটন অঞ্চল

ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেনা এই রকম মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। তাই আপনি যদি ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান এর বিভিন্ন পর্যটন অঞ্চলগুলোতে ঘুরে আসতে চান। ময়মনসিংহ জেলার যেই সকল পর্যটন অঞ্চলগুলো রয়েছে সেখানে যেতে পারেন। ময়মনসিংহ জেলার পর্যটন অঞ্চলগুলোর মধ্যে যেমন,
  • লাল ইটের রাজবাড়ি ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্র শশী লজ যেতে পারেন।
  • শশী লজ ভালোভাবে দেখে কিছুটা সামনে গেলেই দেখতে পাবেন আলেকজান্ডার ক্যাসেল।
  • চিন থেকে নিয়ে আসা কারিগর দিয়ে নির্মিত এই আলেকজান্ডার ক্যাসেল আভিজাত্যে পরিপূর্ণ।
  • আলেকজান্ডার ক্যাসেল থেকে একটু দূরে গেলেই দেখতে পাবেন ব্রহ্মপুত্র নদী।
  • কালের বিবর্তনের রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি তত্ত্বাবধানের অভাবে বিলুপ্তির পথে।
  • ধ্বংসাবশেষ গুলো দেখলে শৈল্পিক কাজগুলো বুঝতে পারা যায়।
  • নির্মিত রয়েছে চিড়িয়াখানা, বাগানবাড়ি এবং পুকুরঘাট সহ বিভিন্ন ঐতিহ্য।
  • ময়মনসিংহ শহরের অতি নিকটে জিরো পয়েন্ট থেকে ময়না দ্বীপ খুবই কাছাকাছি।
  • গাছগাছালি ঘেরা উচু টিলা ও জঙ্গলের মত পর্যটন জায়গাটি ঘুরে দেখে আসতে পারেন।

উপসংহার

আশা করছি পোস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত স্থান, ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, এবং আরও কিছু অঞ্চল সম্পর্কে ধারণা নিতে পেরেছেন। যদি বিস্তারিত জেনে ভালো লেগে থাকে, তাহলে পোস্টের নিচের অংশে মন্তব্য করে পাশেই থাকুন। ২৫২৭৫

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url