মেহগনি ফলের গুণাগুণ ও উপকারিতা
প্রাকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে
আমরা সকলেই মেহগনি গাছের ব্যবহার ও গুণাগুণ সম্পর্কে জানি এটি মূলত কাঠের জন্য জনসাধারণের কাছে আদৃত । এর কাঠ খুবই শক্ত ও আঁশযুক্ত মূলত আসবাবপত্র তৈরি করার জন্য এই গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ছায়া প্রদানকারী বৃক্ষ হিসাবে পথের আশেপাশে ও বাড়ির আঙ্গিনায় এই গাছ লাগানো হয়। এই শুধু এই গাছের কাঠি উপকারি তা নয় বরং এই গাছের ফলের গুনাগুন উপকারিতা ব্যাপক। চলুন মেহগনি ফলের যতগুলো গুনাগুন ও উপকারিতা রয়েছে সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
- ঔষধ হিসেবে এর গুনাগুন ও উপকারিতা
- কীটনাশক হিসেবে এর ব্যবহার
- কীটনাশক নির্যাসটি প্রস্তুত প্রণালী
- সতর্কতা সমূহ
- সর্বশেষ কথা
ঔষধ হিসেবে এর গুনাগুন ও উপকারিতা ঃ
- বিচি ফল ও মূলের গুঁড়ো খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয় ।
- মেহগনির বীজের সাদা অংশ দিয়ে তেল তৈরি করা হয় এই তেল ভেষজ কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয় ।
- ডায়াবেটিক রোগীরা রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য মেহগনি ফলের বিচির ভেতরের সাদা শাঁস পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন .এতে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- মেহগনি গাছের বাকলের নির্যাস শক্তিবর্ধক এবং হজম শক্তি বাড়ায়।
- ফসল পাখির আক্রমণ থেকে বাঁচাতে মেহগনি গাছের ডাল কলম করে লাগিয়ে চারার মত করে ক্ষতর পাশে লাগালে পাখির আক্রমণ থেকে বাঁচা যায় এই গাছে পাখি বাসা বানায় না এমনকি বসেও না।
আরো পড়ুন ঃ বজ্র নিরোধক কিভাবে কাজ করে
কীটনাশক হিসেবে এর ব্যবহার
ধান ফসলের জন্য এ ফলের থেকে তৈরি কীটনাশক নির্যাস খুবই উপকারী। ধান ফসলের মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা , বাদামী গাছ ফড়িং দমনে নির্যাসটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়াও সবজিতেও যেমন বাঁধাকপি ,ফুলকপি, ওলকপি, টমেটো, সিম ও বরবটি তে নির্যাসটি ব্যবহার করা যায়। নির্যাসের উচ্ছিষ্ট অংশ বা ছোবড়া ভেষজ জৈব সার হিসেবে ধান ও সবজি বীজ তলায় ব্যবহার করলে চারা উৎপাদনে পোকামাকড় কম হয়, বেগুন গাছে যার পোকা ,পাতা ছিদ্রকারী পোকা দমনে এর নির্যাসটি বিশেষ উপযোগী। 200 গ্রাম মেহগনি ফলের বিচির গুড়া এক মন ডানা জাতীয় শস্যের জন্য ব্যবহার করা যায় ( রোদে ভালোভাবে বিচি শুকিয়ে গুড়ো করতে হবে ) দানা জাতীয় শস্যের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে বায়ু শুন্য প্যাকেটে সংরক্ষণ করা যায় ।
কীটনাশক নির্যাসটি প্রস্তুত প্রণালী
মেহগনির ফল থেকে এই ভেষজ কীটনাশক তৈরির জন্য এক কেজি ফল সংগ্রহ করে কেটে কুচি কুচি করে ব্লেন্ডার অথবা পাটায় পিষে একটি পাত্রে পাঁচ লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। চার থেকে পাঁচ দিন পর এটি তুলে ভালোভাবে সুতি কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে প্রাপ্ত পানির নির্যাস হল কীটনাশক । এই নির্যাসের সঙ্গে ২০ গ্রাম সাবান বা ডিটারজেন্ট পানি এবং পাঁচ গ্রাম সোহাগা মিশিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট আগুনের তাপে ফুটিয়ে নিতে হবে তৈরি হয়ে যাবে ব্যবহার উপযোগী কীটনাশক, এ নির্যাস ঠান্ডা হলে এতে পাঁচ গুণ পরিমাণ পানি মিশিয়ে ব্যবহার করা যাবে ।
আরো পড়ুন ঃ যে ৫ খাবার নাকের পলিপাস দূর করতে সাহায্য করে ।
সতর্কতা সমূহ
এ ফলের বীজ থেকে কীটনাশক তৈরির সময় হাতে গ্লাভস ও মুখে মাক্স ব্যবহার করতে হবে হঠাৎ করে লেগে গেলে হাত ও মুখ ভালোভাবে সাবান পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে। বর্তমান সময়ে কৃষিতে ব্যাপক রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ব্যাপক হারে হুমকির মুখে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনে এই বিশ্বে পরিবেশ যখন বিপর্যস্ত হতে চলেছে প্রয়োজনীয় খাবারের জন্য তখন বিশ্ব এক পরিবেশ বান্ধব কৃষির দিকে অগ্রসর হয়েছে জনসাধারণের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ও প্রাণবৈচিত্রের হুমকির থেকে রক্ষার জন্য রাসায়নিক কীটনাশক এর পরিবর্তে জৈব কীটনাশক ব্যবহারের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
সর্বশেষ কথা
আমাদের পরিবেশের জলবায়ু এবং আমাদের সর্বসাধারণের সুস্বাস্থ্য কামনার জন্য রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলা উচিত। এখন থেকে আমাদের সকলেই জৈব কীটনাশক ব্যবহার করার জন্য সবাইকে অগ্রসর হতে হবে । যাতে করে আমাদের জনসাধারণের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের ক্ষতি সাধন না হয় ।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স সম্পর্কে জেনে নিন ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url