ব্যক্তিত্ব গঠনে ইসলামী ও সামাজিক কার্যাবলী সমূহ
ভালো ব্যক্তিত্ব গঠনের জন্য প্রথমেই আমাদের নিজের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে । আমরা কেমন মানুষ, আমাদের ভালো ও খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। নেতিবাচক দিকগুলো পরিহার করতে হবে। নিজের ভালো ব্যক্তিত্ব গঠনের জন্য ইসলামিক দিকগুলো ভালোভাবে মানতে হবে। ব্যক্তিত্ব গঠনের ক্ষেত্রে ইসলামিক ও সামাজিক যে কার্যাবলী রয়েছে সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
সামাজিকভাবে ব্যক্তিত্ব গঠন
একটি সমাজ নানা উপাদানে গঠিত হয় সকল উপাদানের মধ্যে ব্যক্তির গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি । আপনার ব্যক্তিত্বের উপর নির্ভর করে আপনার দ্বারা সমাজ আদর্শবান হওয়া না হওয়া। আপনি ভালো ব্যক্তি হতে হলে আপনার ব্যক্তিত্বের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন, অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ গুন । যা আমাদের ব্যক্তিত্বকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। সৎ ও নির্ভরযোগ্য হন, এটি ব্যক্তিত্বের অন্যতম ভিত্তি । সৎও নির্ভরযোগ্য মানুষ সবার কাছে বিশ্বাসী এবং সমাজের সম্মানিত হয়। সহযোগিতা শীল হোন, সহযোগিতা শীল ব্যক্তি সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ব্যক্তিত্ব গঠনে ইসলাম কি বলে
মানব সমাজে ব্যক্তির গুরুত্বের কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ব্যক্তিত্ব গঠনের উপর বেশি গুরুত্ব করেছেন। এই বিষয়ে এত পরিমাণ শিক্ষা ও আমলী নমুনা রেখে গেছেন যে, পৃথিবীর যেকোনো মানুষ তা থেকে দিক নির্দেশনা গ্রহণ করতে পারে। ব্যক্তিত্ব গঠনের ক্ষেত্রে তার শিক্ষা ও নির্দেশনা এবং চেষ্টা ও প্রতিষ্ঠার কেন্দ্রীয় বিষয়টি হচ্ছে আখিরাতের উপর ঈমান। আখিরাতের নাজাতের জন্য ব্যক্তিকে উত্তম স্বভাব চরিত্রের অধিকারী হতে হবে, আর আখিরাতের শাস্তি থেকে আত্মরক্ষার জন্য আচরণ বর্জন করতে হবে, এটি হচ্ছে রাসূল সাঃ এর ব্যক্তিত্ব গঠনের প্রচেষ্টার মূলনীতি।
আরো পড়ুন ঃ বজ্র নিরোধক কিভাবে কাজ করে
আদর্শ ব্যক্তিত্ব গঠনে মুমিনের বৈশিষ্ট্য
মানবিক গুণাবলীর মাধ্যমে সামাজিক শান্তি তৈরি হয় প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তাআলা বলেন নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী। ব্যক্তিত্ব গঠনে মানবিক গুণাবলীর বিকল্প নেই।
সত্যবাদিতা- সত্যবাদিতা মুমিনের ভাষণ, সততা মানুষকে সফলতার পথ দেখায়।
সুন্দর কথা- সবার সঙ্গে সুন্দর কথা বলা সদকার সমতুল্য, সুন্দর কথা মানুষের অন্তরে অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করে।
অতিথি পরায়নতা- অতিথির সমাধর ইসলামে অন্যতম সৌন্দর্য, সাধ্য অনুযায়ী অতিথির আদর আপ্যায়ন করা কর্তব্য।
মানুষের জন্য কল্যাণ কামনা- সবার জন্য কল্যাণের প্রত্যাশা মুমিনের অন্যতম গুণ ।
আরো পড়ুনঃ বিদ্যুৎ চমকালে করণীয়
ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ- ক্রোধ দমন করা ও প্রতিশোধ নেওয়া থেকে বিরত থাকা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রাগ দমন কারীর মর্যাদা আল্লাহ তায়ালার কাছে অনেক উঁচু ।
ঝগড়া বিবাদ নিরসন- ঝগড়া বিবাদ নিদর্শন এগিয়ে আসা মহাপণ্যের কাজ, যা একটি মুমিনের বৈশিষ্ট্যে অন্যতম।
উপরে আলোচিত গুণাবলী সমূহ পালন করলে আল্লাহর নিকট প্রিয় হওয়া যায়, এবং সমাজে ব্যক্তিত্বের একটা গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, ব্যক্তিত্ব গঠনে যা প্রতিটি মানুষের বিশেষ প্রয়োজন ।
পোশাক কি ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়ক
কথাটি শুনে অনেকেই ভাবছেন যে, পোশাক ব্যক্তিত্বের সহায়ক হতে পারেনা এ কথা সত্য নয়, কেননা পারস্য কবি শেখ সাদী আমাদের সেই শিক্ষা দিয়েছেন। গল্পটা নিশ্চয়ই সবারই জানা আছে। সেইসব মনীষীও নেই, থাকলেও তাদের কদর নেই। আমাদের জন্ম চক্ষু ক্ষীণ হয়েছে, আমাদের অন্তর চক্ষুতে ছানি পড়েছে। পুঁজিবাদ এখন মানুষকে এক কঠিন প্রতিযোগিতায় ছেড়ে দিয়েছে, এ প্রতিযোগিতায় পোশাক আশাক ঠিক না থাকলে চলবে না।
আপনি কর্পোরেট জব করেন? পোশাকে আসাকে আপনাকে ফিটফাট থাকতে হবে, যাতে আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে আন্ডারস্টিমেট করতে না পারে।. আপনি ব্যবসা করেন, আপনাকে পোশাক আশাকে স্মার্ট থাকতে হবে, আপনার কোন কাস্টমার যেন আপনাকে অপছন্দ বা উন জ্ঞান করতে না পারে। এতে আপনার ব্যক্তিত্বের সংকট তৈরি হবে। বর্তমান সমাজে পোশাকও ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়ক , এটা একটি বাস্তব সত্য কথা।
আরো পড়ুনঃ মেহগনি ফলের গুনাগুন ও উপকারিতা।
শেষ কথা
সর্বদা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করুন, এটি আমাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে এবং নিজে আত্মবিশ্বাসী হন। আত্মবিশ্বাস হলো ব্যক্তিত্ব গঠনের অন্যতম শক্তিশালী বৈশিষ্ট্য। আত্মবিশ্বাসী মানুষ অন্যদের কাছে আকর্ষণীয় এবং তারা সহজেই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে। নিজের ব্যক্তিত্ব সঠিক ভাবে গঠন করতে সামাজিক এবং ইসলামিক এই কার্যাবলী সমূহ অবশ্যই পালন করতে হবে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url