ব্রণ কমানোর ঘরোয়া কিছু উপায়

 আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা কমিয়ে দেয় ব্রণ নামক সমস্যা।  ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা জানা থাকলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়। ব্রণের সমস্যা সৃষ্টি হয় আমাদের ত্বকের তৈলগ্রন্থি ব্যাটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে।  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বয়সন্ধীকালীন সমস্যা হিসেবে এটি চিহ্নিত করা হয়।তবে শুধু বয়সন্ধীকালেই নয়, ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে- মেয়ে উভয় ক্ষেত্রেই।  ঘরোয়া উপায়ে কিছু রূপচর্চার মাধ্যমে ব্রণ দূর করা সহজ হয়।


পোস্ট সূচীপত্র ঃ

শসা আপেল ও তুলসী পাতার তৈরি ফর্মুলা

শশার রস তৈলাক্ততা দূর করতে খুবই কার্যকর। প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে শশার রস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন।আপেল এবং মধুর মিশ্রণ হচ্ছে ব্রণের দাগ দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। প্রথমে আপেলের পেষ্ট তৈরি করে তাতে ৪-৬ ফোঁটা মধু মিশাতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে এরপর মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।ব্রণের জন্য তুলসি পাতার রস খুব উপকারী। কারণ তুলসি পাতায় আছে আয়ূরবেদিক গুণ। শুধুমাত্র তুলসি পাতার রস ব্রণ আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে রেখে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

আরো পড়ুনঃ হাঁটুর ব্যাথার কারণ ও ঘরোয়া প্রতিকার সমূহ

হলুদ,চন্দন কাঠ ও গোলাপজলের তৈরি নির্যাস

কাঁচা হলুদ এবং চন্দনকাঠের গুঁড়ো ব্রণের জন্য খুবই কার্যকর দুটো উপাদান। সমপরিমাণ বাটা কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে নিয়ে এতে পরিমাণ মত পানি মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করতে হবে। মিশ্রণটি এরপর ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর শুকিয়ে গেলে মুখঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।গোলাপজলের নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ কমে যায়। দারুচিনি গুঁড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ব্রণের ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সংক্রমণ, চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।

প্রথমে চন্দন কাঠের গুড়োঁর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। এরপর এতে ২-৩ ফোঁটা লেবুর রস মিশাণ। গোলাপজল অনেকের ত্বকের সাথে এডজাষ্ট হয় না। তারা সেই ক্ষেত্রে গোলাপ জলের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পারেন। এই মিশ্রণ আপনার ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। সপ্তাহে ৩-৪দিন ব্যবহার করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

কমলা লেবু ,পেঁপে ও নিম পাতার তৈরি নির্যাস

কমলা লেবুর খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। মসুরির ডাল আর চাল ভিজিয়ে ভালো করে পিষে নিন। ঐ পেস্টের মধ্যে চন্দন পাউডার, মুলতানি মাটি, কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো মিশিয়ে ভালো করে মিলিয়ে নিন। এই মিশ্রণের মধ্যে দুই চামচ দুধও মিশিয়ে নিতে পারেন। মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর ধুয়ে নিন।এক কাপ পাকা পেঁপে চটকে নিন। এর সঙ্গে এক টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চালের গুঁড়ো মেশান। মিশ্রণটি মুখসহ পুরো শরীরে লাগান। ২০-২৫ মিনিট মাসাজ করে গোসল করে ফেলুন। পেঁপে ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস।চার-পাঁচটা নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে পিষে নিন। এর মধ্যে এক চামচ মুলতানি মাটি, অল্প গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন।  মুখে লাগিয়ে বেশ কিছুক্ষণ রেখে দিন। প্যাকটা মুখে শুকিয়ে গেলে হালকা পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন।

সব সময় বাইরে থেকে আসামাত্র মুখ ফেসওয়াস দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া হালকা গরম পানির স্টীম নিতে পারেন। এতেকরে ত্বকে জমে থাকা ধূলোবালি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

একদিনে ব্রণ কমাতে সাহায্য করে লেবুর রস ও বরফ

এক টেবিল চামচ লেবুর রস এবং এক চা-চামচ দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি সারা রাত ব্রণে লাগিয়ে রাখুন। সকালে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আশা করা যায় ব্রণ কমে আসবে।

২৪ ঘণ্টায় ব্রণ কমাতে বরফ ব্যবহার করুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্রণ দূর করতে চাইলে বরফের সাহায্য নিতে পারেন। নরম কাপড়ে বরফের টুকরো পেঁচিয়ে নিন। কাপড়টি আলতো করে ব্রণের ওপর রাখুন। ২০ সেকেন্ড রেখে সরিয়ে নিন। আবার রাখুন। এভাবে বেশ করেকবার করুন। ২৪ ঘণ্টায় দুইবার ট্রিটমেন্টটি করলে ব্রণ কমে আসবে।
 টি ট্রি অয়েল
টি ট্রি অয়েলকে ব্রণের শত্রু বলা যায়। এটা দ্রুত ব্রণ কমিয়ে দেয়। ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক ফোঁটা টি-ট্রি অয়েল ব্রণের ওপর লাগিয়ে নিন। সকালে ঘুম থেকে জেগে সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ব্রণ কমে গেছে।

একদিনে ব্রণ কমাতে কমাতে ডিমের ব্যবহার

ডিমের সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং অ্যামিউনো অ্যাসিড রয়েছে। এই উপাদানগুলো ব্রণের জীবাণু ধ্বংস করে তাড়াতাড়ি ব্রণ কমিয়ে দেয়। ডিমের সাদা অংশ ভালো করে ফেটিয়ে নিয়ে তা আঙুলের ডগার সাহায্যে ব্রণের ওপর লাগান। ৪-৫ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন।লেবুর রস মাখিয়ে রাতারাতি ব্রণ দূর করা যায়। সে জন্য একটি তুলার বল নিন। তাতে লেবুর রস মাখান। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে তুলাটি ব্রণের ওপরে কিছুক্ষণ রাখুন। সকালে সাধারণ তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

সতর্কতা ও করণীয়

সতর্কতা :
যারা ব্রনে ভোগে তাদের মুখে তেল বা ক্রিম মাখা উচিত নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ সেবন করবেন না। ব্রন মুখে হাত/ নখ লগিানো কোনক্রমেই সমচিন নয়। বেশী তৈলাক্ত,চুলকানী যুক্ত
খাবার বর্জনীয়। যদি সম্ভব হয় উপরিক্ত নিয়ম অনুযায়ী উপকরণ সমূহ দিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ কমানোর জন্য নির্যাস তৈরি করে ব্যবহার করা যায় । এতে অনেকটাই ফলদায়ক কাজ করে থাকে।
করণীয় :
ডাক্তারের পরামর্শ মতে ঔষধ সেবন, ভাল সাবান দিয়ে আলতুভাবে মুখ ধুয়ে পরিস্কার রেখে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনে অতি অল্প সময়ে হোমিওপ্যাথিতে ব্রন এবং ব্রনের দাগ থেকে চিরমুক্তি সম্ভব ইন্শাল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url