স্মার্ট ঘড়ি ব্যবহারের সুবিধা সমূহ
একবিংশ শতাব্দীতে এসে আমাদের জীবনযাত্রা প্রায় পুরোটায় যন্ত্র নির্ভর হয়ে গেছে। আর এরই পথ ধরে আমাদের সেই চিরপরিচিত হাত ঘড়িতেও এসেছে পরিবর্তন।একে আপনি মোবাইল ফোনের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি এটি ছোটখাট একটি কম্পিউটারের মত সার্ভিস দিতে পারে। এই কারনেই মূলত তরুনদের মধ্যে এই ঘড়িটি এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলুন এর চমৎকার সব সুবিধাগুলো জেনে নেই।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
- স্মার্টওয়াচ ব্যবহারের সুবিধা
- সময় দেখায়
- এ্যালার্ট ও নোটিফিকেশন সুবিধা
- ফিটনেস ট্র্যাকিং সুবিধা
- কলিং এবং মেসেজিং এর সুবিধা
- নেভিগেশন সাপোর্ট
- শেষ কথা
স্মার্টওয়াচ ব্যবহারের সুবিধা
স্মার্টওয়াচ দেখতে সাধারন ঘড়ির মত হলেও এটি সময় দেখানো ছাড়াও আরো অনেক সার্ভিস দেয়। অন্যান্য সাধারন ঘড়ির চেয়ে ভিন্ন এই ডিভাইসগুলোতে রয়েছে স্মার্ট কম্পিউটিং সিস্টেম। এটি ইন্টারনেটের সাথে কানেক্ট হতে পারে এবং আপনার স্মার্ট ফোনের সাথে কানেক্ট হয়ে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। ফলে এই ঘড়ির মাধ্যমেই ফোন রিসিভ, মেসেজ আদান-প্রদান ও গান শোনা সহ নানাবিধ কাজ করতে পারবেন।
সময় দেখায়
যেহেতু এটি একটি ওয়াচ বা ঘড়ি কাজেই ডিভাইসটির প্রাথমিক কাজ নির্ভূলভাবে সময় দেখানো। কিন্তু সময় দেখানোর স্টাইল বা আউটলুকও প্রচলিত ঘড়ি থেকে ভিন্ন। স্মার্টওয়াচগুলোতে সময় দেখানোর পাশাপাশি অসংখ্য ফিচার থাকে যেগুলোর পাশাপাশি অ্যালার্ম, স্টপওয়াচ এবং টাইমারের সুবিধাতো আছেই। তবে এই ঘড়ির সব মডেলে স্পিকার নাও থাকতে পারে যদিও সেগুলো ভাইব্রেটের মাধ্যেমে সময় জানিয়ে দেয়।
আসলে যদিও এটি সেই চেনা পরিচিত ঘড়িই কিন্তু আধুনিক সব ফিচার সংযোজনের কারনে এটি একটি অনবদ্য স্মার্ট ডিভাইসে পরিনত হয়েছে। একে আপনি মোবাইল ফোনের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি এটি ছোটখাট একটি কম্পিউটারের মত সার্ভিস দিতে পারে।
এ্যালার্ট ও নোটিফিকেশন সুবিধা
একটি হাত ঘড়ি থেকে আপনি আপনার ফোনের প্রাথমিক সার্ভিসগুলো উপভোগ করতে পারবেন, এর থেকে চমৎকার বিষয় আর কি হতে পারে! ধরুন আপনি খুব ভীড়ের ভেতর আছেন যেখানে আপনার মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করা কঠিন সেখানে স্মার্ট ওয়াচ আপনাকে ফোনের প্রাইমারী প্রাই সব তথ্যই সরবরাহ করবে। অর্থাৎ এই ডিভাইসটি যে ফোনের সাথে সংযোগ করা থাকবে তার সমস্ত তথ্য এবং নোটিফিকেশন দেখিয়ে দিবে।
ফিটনেস ট্র্যাকিং সুবিধা
সময় দেখানো ছাড়া স্মার্ট ওয়াচের যে ফিচারের জন্য এর জনপ্রিয়তা এত বেশি তা হল এর ফিটনেস ট্র্যাকিং সুবিধা। এই বৈশ্বিক মহামারীর কালে প্রায় সবাই নিজের সুস্থতা এবং ফিটনেস সম্পর্কে অনেক বেশী সজাগ হয়েছে। আর এই চমৎকার ডিভাইসগুলোতে নানারকম ফিটনেস ট্র্যাকার এবং সেন্সর থাকে যা স্বাস্থ্য রক্ষায় অনেক সহায়ক। যেমনঃ
আরো পড়ুনঃ কিবোর্ড এর পরিচিতি ও আবিষ্কারের তথ্য
পেডোমিটার- এই সেন্সর হাঁটার যাবতীয় তথ্য সংরক্ষন করে। কতগুলো স্টেপ হাটলেন, এবং তাতে আপনার কত ক্যালরি ব্যায় হল, এমনকি আপনার ওজনের হিসাবে কতটা হাটা দরকার ইত্যাদি তথ্যও প্রদান করে থাকে।
ব্লাড প্রেসার মনিটর- ডায়াবেটিসের মত ব্লাড প্রেসারও আমাদের দেশে এখন অতি সাধারণ সমস্যা। এই ডিভাইসগুলোতে থাকা ব্লাড প্রেসার মনিটর আপনার রক্তচাপ পর্যবেক্ষনে রাখতে সাহায্য করে সাথে পুরোনো রক্তচাপের চার্টও সংরক্ষন করে।
ফিজিক্যাল এক্টিভিটি ট্র্যাকার- অনেক স্মার্ট ওয়াচে ফিজিক্যাল এক্টিভিটি ট্র্যাকারও থাকে যা দিয়ে আপনি বিভিন্ন সময়ে করা খেলাধুলার রেকর্ড রাখতে পারবেন। এছাড়াও আপনার শরীরচর্চার ও যোগাসনের রেকর্ডও সংরক্ষিত রাখতে পারে।
হার্ট-রেট মনিটর- এখন প্রায় সকল ডিভাইসেই পাওয়া যায়। সাধারনত যারা পেশাগতভাবে খেলাধুলার সাথে যুক্ত আছেন তাদের জন্য এই অ্যাপটি অনেক গুরুত্বপূর্ন।
স্লীপ মনিটর- সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। তাই অনেক স্মার্ট ওয়াচেই এখন স্লীপ মনিটর ফিচারটি থাকে। এটি আপনার প্রতিদিনের ঘুমের রেকর্ড সংরক্ষন করা সহ অন্যান্য সুবিধা প্রদান করে।
কলিং এবং মেসেজিং এর সুবিধা
বাজারে প্রাপ্ত প্রায় সব মডেলেই এই সুবিধাটি এখন পাওয়া যায়। আপনি যখনই আপনার স্মার্টফোনের সাথে স্মার্ট ওয়াচ কানেক্ট করবেন, এই ঘড়ির মাধ্যমেই আপনার ফোনে আসা কল রিসিভ করতে অথবা কাউকে কল দিতে পারবেন। এমনকি প্রয়োজনে মেসেজও করতে পারবেন। অর্থাৎ এবার থেকে আর আপনার কোন কল মিস হবে না!
নেভিগেশন সাপোর্ট
আপনি কি মাঝে মধ্যেই পথ ভুলে যান? এখন আর কোন ভয় নেই, হাতে যদি থাকে একটি স্মার্ট ওয়াচ তবে পথ খুঁজে নেয়া এখন আর কোন শক্ত কাজ নয়। কারন প্রায় সব মডেলের স্মার্ট ওয়াচেই ইনবিল্ট নেভিগেশন ফিচারটি এখন থাকে। তাই ফোন খুঁজে রাস্তা বের করার প্রয়োজন পড়ে না, ডিভাইসটিই ভাইব্রেশনের মাধ্যমে সঠিক দিক নির্দেশ করে।
আরো পড়ুনঃ যে ১৫ টি বাটন মোবাইল ফোনে দীর্ঘ সময় চার্জ থাকে
এখানেই শেষ নয়, এই ডিভাইসে আপনি পছন্দের গান শুনতে পারবেন, ফোন থেকে পছন্দের গান খুঁজে নিতে পারবেন, এমনকি ওয়াইফাই সংযোগ থাকলে ফোন ছাড়াও সরাসরি ডিভাইস থেকেই গান বাজানো যাবে। এছাড়াও আপনি যদি প্রায়শই আপনার চাবি বা ফোন হারিয়ে ফেলেন তবে এর ফাইন্ড মাই ফোন এবং কী ফাইন্ডার ফিচার দিয়ে সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন।
শেষ কথা
আপনারা অবশ্যই স্মার্ট ঘড়ির সুবিধা সমূহ জানতে পেরেছেন আশা করি এর সুবিধা বুঝে আপনারা এটি ব্যবহার করতে পারবেন। পোস্টটি ভাল লাগলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন এবং আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্ট বক্সে জানান। এই ধরনের ইন্টারেস্টিং তথ্য বহুল পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট এক্স ডিসক্রাইব এর সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url