হাতের কাছে রাখুন প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম
প্রয়োজনের সময় প্রাথমিক চিকিৎসার উপকরণ বাড়িতে থাকলে খুব দ্রুত ও সহজেই যেকোন দূর্ঘটনার মোকাবেলা করা যায়। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জরুরী উপকরণ যা প্রত্যেকটি বাড়িতে রাখা আবশ্যক যাতে করে ছোটখাটো কোন দুর্ঘটনা বা কোন অসুস্থতার জন্য ডাক্তারের কাছে না গিয়ে তাৎক্ষণিক ঘরেই প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম দ্বারা এর মোকাবেলা করা যায়। চলুন বিস্তারিত এই সম্পর্কে জেনে নেই।
পোস্ট সূচীপত্রঃ
প্রাথমিক সরঞ্জাম
আপনি যেখানেই যান না কেন, প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো নিজের সাথেই রাখুন। যেকোনো মুহূর্তে প্রয়োজন পড়ে যেতে পারে। মাঝে মাঝে এমন হতে পারে যে, আপনার হয়তো মাথা ব্যথা, হঠাৎ অ্যাসিডিটির সমস্যা হচ্ছে, একটা ওষুধ আপনার খুব প্রয়োজন; আপনার আশে পাশে কোথাও পাচ্ছেন না অথচ নিজের সাথেই থাকলে খুব উপকার হত, সেক্ষেত্রে ওষুধটা নিজের সাথেই থাকলে খুব উপকার হয়। এই ধরণের ওষুধকে ‘ওভার দ্যা কাউন্টার’ ড্রাগ বা OTC ড্রাগ বলে। কারণ এইসব ওষুধ ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই আপনি ফার্মেসি থেকে কিনতে পারবেন।
* পুড়ে যাওয়া অংশে ব্যবহারের মলম
* যন্ত্রণানাশক ক্রিম ও স্প্রে
* সাধারণ সর্দি-জ্বরের জন্য ওটিসি মেডিসিন
কিছু সমস্যা এবং সে সময় কি ওষুধ খাবেন তা জেনে নিন। ওষুধের জন্য সাথে ছোট একটা ব্যাগ বা নিজের হাত ব্যাগের সাইড পকেটেই ওষুধগুলো নিয়ে রাখতে পারেন।
মাথা বা অন্য কোথাও ব্যথা,জ্বর
ব্যথার ক্ষেত্রে আপনি স্বল্প মাত্রার পেইন কিলার খেতে পারেন। যেমন অ্যাস্পিরিন, প্যারাসিটামল, অ্যাসিটামিনোফেন, ইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন। আর জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল ই যথেষ্ট।
তবে পেইন কিলারের প্রভাবে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে, এজন্য পেইনকিলার অবশ্যই ভরা পেটে খেতে হবে, আরও ভাল হয় একটা অ্যাসিডিটির ট্যাবলেটও খেয়ে নিলে, সেক্ষেত্রে অ্যাসিডিটির ট্যাবলেট (যেমন রেনিটিডিন বা ওমেপ্রাজোল) খাবার আগেই খেয়ে নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ এলার্জি রোগ প্রতিরোধে ঘরোয়া উপায় সমূহ
পাশাপাশি মাথায় রাখতে হবে যে বড়দের ওষুধের ডোজ বা মাত্রা আর শিশুদের ওষুধের মাত্রার মধ্যে বিস্তর ফারাক। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মতো সঠিক মাত্রার ওষুধ শিশুকে দিতে হবে।
সাবধানতা
অতিরিক্ত প্যারাসিটামল ও ব্যথার ওষুধ লিভার বা যকৃত এবং কিডনির ক্ষতির কারণ। এগুলি দীর্ঘদিন ধরে খেলে একই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই খুব বেশী প্রয়োজন না পড়লে, এবং বেশি মাত্রার প্যারাসিটামল বা ব্যথার ওষুধ অকারণে খাওয়া উচিত না।
অ্যাসিডিটির সমস্যায়
অ্যাসিডিটির সমস্যার কারণে হঠাৎ বুক জ্বালা-পোড়া করলে,সেটা কমানোর জন্য অ্যান্টাসিড বা মিল্ক অফ ম্যাগনেসিয়া দুতিন চামচ খেয়ে নিতে পারেন। আর আরও অ্যাসিডিটি প্রতিরোধে একটা রেনিটিডিন বা ওমেপ্রাজোল খেয়ে নিলে আবার কষ্ট পাবেন না, পাশাপাশি ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত কাবার পরিহার করতে হবে।
কেটে গেলে
র্ঘটনা বসত হঠাৎ হাতে-পায়ে কেটে- ছিলে যেতে পারে । সেক্ষেত্রে ব্যাগে ২-৩ টি ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ এবং অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম রাখতে পারেন। যেমন ব্যাসিট্রাসিন ও নেওমাইসিন ক্রিম যা বাজারে নেবানল, নেবাসন, নিওসিন, নিও বি, নেব্রাসিন ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন ঃ গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণ ও ঘরোয়া প্রতিকার
পুড়ে গেলে
কোথাও পুড়ে গেলে বার্ন ক্রিম লাগাতে পারেন। যেমন সিলভার ক্রিম (বাজারে বার্না, সিলক্রিম, নিওজিন ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়।)কোথাও কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে সেখানে দ্রুত জীবাণুর সংক্রমণ হয়। তাই তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিলে জীবাণুর সংক্রমণ এবং ফলসরূপ যে পুঁজ বা ইনফেকশন হয় তা প্রতিরোধ ওরা যায়।
সাবধানতাঃ বেশি কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
পা মচকে যাওয়ার ক্ষেত্রে
হাঁটতে গেলে, চলাফেলা করতে গেলে হঠাৎ বেখেয়ালে পা মচকে যায়। তখন হাঁটতে খুব কষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে ব্যাগে ক্লোফেনাক বা ডাইক্লোফেনাক জেল ডাইক্লোফেনাক, কারিসোপ্রোডল বা ব্যাক্লোফেন রাখুন। এই ব্যথানাশক জেল গুলি আক্রান্ত জায়গায় দিনে দুতিন বার মালিশ করলে ব্যথা তাড়াতাড়ি কমে আসে। ।
অ্যালার্জির সমস্যায়
কারো কারো ডাস্ট অ্যালার্জি থাকে। হালকা ধুলো-বালিতে হাঁচি-কাশি শুরু হয়ে যায়। ডাস্ট অ্যালার্জি ছাড়াও অনেকের খাবারেও অ্যালার্জি থাকে। হঠাৎ করে হাঁচি-কাশির সাথে চোখ দিয়ে হয়তো পানিও পড়া শুরু হলো। সেক্ষেত্রে অ্যান্টিহিস্টামিন খেতে পারেন। সেট্রিজিন, লেভো-সেট্রিজ এভিল, হিস্টাসিন বা ফেনারগন জাতীয় ওষুধ এমন সমস্যায় ভালো কাজ দেয়।
প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো হাতের কাছেই রাখুন। ঘরের বাইরে থাকলে হঠাৎ নিজের কোনো প্রয়োজনে বা অন্যের প্রয়োজনে ইমারজেন্সি মুহূর্তে এই স্বভাবটি চমৎকারভাবে উপকারে লেগে যাবে।
প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ- প্রাথমিক চিকিৎসার কি কি উপকরণ বাড়িতে রাখা প্রয়োজন ?
উত্তরঃ-
আমারা যখন বাসয় থাকি সে সময় যেকোনো দুর্ঘটনায় শরীরের কোথাও কেটে যেতে পারে কিংবা কোথাও হালকা পুড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে মাথাব্যাথা, সর্দি-জ্বরসহ নানাবিধ অসুখ হতে পারে।
এ ছারাও যেকোনো সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো জরুরি পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। জরুরি মুহূর্তে ব্যবহারের জন্য বাসায় সবসময় কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা উপকরণ রাখা ভালো।
* অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ও লিকুইড
* পুড়ে যাওয়া অংশে ব্যবহারের মলম
* যন্ত্রণানাশক ক্রিম ও স্প্রে
* সাধারণ সর্দি-জ্বরের জন্য ওটিসি মেডিসিন
* আইস কিউব
* তুলা, গজ, কাঁচি।
* ব্যান্ডেজ
প্রস্নঃ- ব্যান্ডেজ কি কাজে লাগে?
উত্তরঃ-
মেডিকেল ব্যান্ডেজগুলি প্রধানত ক্ষত সংক্রমণ রোধ করতে ক্ষত ব্যান্ডেজ করতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও মেডিকেল ব্যান্ডেজ সাধারণত- ব্যান্ডেজ, স্থির করা এবং শস্য বা আঘাতিত অংশগুলি রক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হয় ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url