স্যামসাং ও অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের মধ্যে পার্থক্য

>

 কমবেশি আমরা সকলেই অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে থাকি। আমরা প্রায় এটি সকলেই জানি যে, Samsung ব্যবহারকারীদের জন্য দুর্দান্ত সব ফোন তৈরি করে যা অন্যান্য ফোনগুলো থেকে অনেক ক্ষেত্রে ইউনিক হয়। চলুন samsung অ্যান্ড্রয়েড ও সাধারণ এন্ড্রয়েড মোবাইলের পার্থক্য গুলো জেনে নেই। 

পোস্ট সূচীপত্রঃ

Samsung ফোন গুলোর অপারেটিং সিস্টেম

অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম দিয়েই মূলত Samsung ফোন‌ এবং ট্যাবলেট গুলো তৈরি করা হয়। সহজ কথায় বলতে গেলে, Samsung এর সকল ফোনগুলো মূলত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের উপর নির্ভর করে চলে এবং স্যামসাং ফোন গুলোও আসলে অ্যান্ড্রয়েড ফোন, যা আমরা সকলেই জানি।

Windows এবং macOS যেরকমভাবে ডেক্সটপ কম্পিউটারের জন্য তৈরি করা অপারেটিং সিস্টেম, ঠিক তেমনিভাবে মোবাইলের জন্য দুটি প্রধান অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড অন্যতম। আর অন্যটি হলো, অ্যাপলের iOS, যা শুধুমাত্র আইফোনে চলে। বাজারের অন্যান্য মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমগুলো বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে এবং অনেক অপারেটিং সিস্টেমের ফোন ইতিমধ্যেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। এসবের মধ্যে যেমন, Windows Mobile, BlackBerry OS, এবং Tizen ইত্যাদি। ‌

আরো পড়ুনঃ হেডফোন ব্যবহার করলে যেসব ক্ষতি হয়

অনেক স্মার্টফোন ম্যানুফ্যাকচারেরা তাদের ডিভাইসে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের সাথে Google Mobile Services বা (GMS) অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। GMS হল গুগলের লাইসেন্স প্রাপ্ত একটি ইন্টারফেস এবং অ্যাপ্লিকেশন যেমন: Google Search, Google Chrome, Gmail, YouTube এর একটি সেট সেই ডিভাইসে অন্তর্ভুক্ত করে।তবে, Android এবং GMS সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। যেখানে অ্যান্ড্রয়েড হল একটি ফোনের অপারেটিং সিস্টেম, আর Google Mobile Services হল, গুগলের একটি অ্যাপ্লিকেশন এর সেট। এখন, স্মার্টফোন মেনুফ্যাকচাররা চাইলে তাদের ডিভাইসে শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করার পর তাদের অ্যাপ্লিকেশনের সেট এবং নিজস্ব ইন্টারফেস ব্যবহার করতে পারে।

অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস থেকে স্যামসাং ফোনগুলি কীভাবে আলাদা

আমরা এটি সকলে জানি যে, অ্যান্ড্রয়েড হলো একটি শক্তিশালী অপারেটিং সিস্টেম, যা বাজারের প্রায় সমস্ত মোবাইল ম্যানুফ্যাকচারেরা ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে, কেন শুধুমাত্র Samsung অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ক্ষেত্রে বেশি ক্রেডিট নিতে পারে?

Samsung হলো একটি ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি, যারা মনিটর, হোম অ্যাপ্লায়েন্স এবং টিভির মতো যন্ত্রপাতি গুলো তৈরি করে থাকে। এছাড়াও, এটি স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং অন্যান্য কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট তৈরি ও বিক্রি করে থাকে।

স্যামসাং এর ফোনগুলো অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস থেকে বেশ কিছু কারণে আলাদা। এসবের মধ্যে রয়েছে:
হার্ডওয়্যার
Samsung কোম্পানি স্মার্টফোন তৈরি করার ক্ষেত্রে তাদের তৈরি নিজস্ব প্রসেসর, মেমোরি এবং স্টোরেজ তৈরি করে থাকে। এর ফলে, এটি ফোন গুলোকে আরো দক্ষ এবং কাস্টমাইজ করার ক্ষমতা দেয়। এছাড়াও, Samsung তাদের ফোনগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাই কোয়ালিটি ডিসপ্লে, ক্যামেরা এবং অন্যান্য উপাদানগুলো ব্যবহার করে।

সফটওয়্যার
একটি জিনিস যা স্যামসাং ফোন গুলোকে অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড চালিত ফোনগুলো থেকে আলাদা করে তোলে, সেটি হল, এটির One UI (যা পূর্বে Samsung Experience এবং TouchWiz নামে পরিচিত ছিল)। Samsung তাদের ফোন গুলোতে নিজস্ব Android Interface ইন্টারফেস ব্যবহার করে, যা মূলত One UI নামে পরিচিত।

One UI হল অ্যান্ড্রয়েড এর একটি কাস্টমাইজড ভার্সন, যা স্যামসাং ফোন গুলোকে একটি ইউনিক চেহারা দেয়। One UI স্যামসাং ফোন গুলোতে অতিরিক্ত ফিচার ও কাস্টমাইজেশন অপশন দিয়ে থাকে।


স্মার্টফোন মেনুফ্যাকচাররা মূলত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমকে তাদের নিজের মতো করে কাস্টমাইজ করে ব্যবহারকারীদের ভালো এক্সপেরিয়েন্স দেওয়ার চেষ্টা করে। একটি ফোনের ইউজার ইন্টারফেস অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রধান আকর্ষণীয় পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ, এক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা এমন সব ফিচার, কাস্টমাইজেশন অপশন, Samsung Apps এবং সার্ভিস পান, যেগুলো আসলে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম অফার করত না। এসব ফিচারগুলোর মধ্যে যেমন: Edge Panels, Modes Routines, Secure Folder, এবং Bixby Voice Assistant।

সব অ্যান্ড্রয়েড ফোন কী আসলে একই

না, সব অ্যান্ড্রয়েড ফোন আসলে এক নয়। কারণ হলো, অনেক কোম্পানির মতো স্যামসাং ও তাদের ডিভাইসে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করে থাকে। বাজারে আরও অন্যান্য স্মার্টফোন ম্যানুফ্যাকচার রয়েছে, যারাও অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করে, যাদের মধ্যে রয়েছে Google, Sony, Motorola, OnePlus, Xiaomi, Oppo এবং Vivo ইত্যাদি।

স্যামসাং এর মতোই এসব স্মার্টফোন মেনুফ্যাকচাররা ও তাদের তৈরি অ্যান্ড্রয়েড ফোন গুলোতে Custom Skin বা User Interface যোগ করে। অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমকে কাস্টমাইজ করে ফোন গুলোকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করতে এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে তারা তাদের নিজস্ব UI ফোনগুলোতে যোগ করে। এসবের মধ্যে যেমন: Google এর Pixel UI, OnePlus এর OxygenOS, Xiaomi এর MIUI এবং Oppo এর ColorOS ইত্যাদি।

বিকল্প অপারেটিং সিস্টেম

Samsung তাদের সমস্ত ডিজিটাল ডিভাইস গুলোর জন্যই অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করে না। ‌বরং, তারা Tizen OS এর মত অপারেটিং সিস্টেম ও ব্যবহার করে থাকে, যা মূলত স্মার্টওয়াচ এবং অন্যান্য ইন্টারনেট অফ থিংস বা IoT ডিভাইস গুলোর জন্য ব্যবহার হয়।

এসব কারণেই মূলত স্যামসাং অ্যান্ড্রয়েড এর সাহায্য নিয়ে এবং বাহিরের বিভিন্ন দিক থেকে তাদের ফোন গুলোকে উন্নত করছে। যার ফলে, এটি ব্যবহারকারীদের জন্য একটি সমন্বিত এবং উন্নত এক্সপেরিয়েন্স দিচ্ছে।

শেষ কথা

স্যামসাং এবং সাধারণ অ্যান্ড্রয়েড ফোন গুলোর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে, যার কারণে অ্যান্ড্রয়েড ফোন হওয়া সত্বেও অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলোর চাইতে স্যামসাং ফোন গুলো আলাদা। Samsung তাদের ফোনগুলোতে উচ্চমানের হার্ডওয়্যার সামগ্রী, উদ্ভাবনী ডিজাইন এবং কাস্টমাইজড অ্যান্ড্রয়েড ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহার করে, যা ব্যবহারকারীদেরকে একটি প্রিমিয়াম এক্সপেরিয়েন্স দেয়। এরকম তথ্য পেতে এক্স ডিসক্রাইব এর সাথেই থাকুন। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url